- Back to Home »
- ক্ল্যাসিক্যাল ফিজক্স , বিজ্ঞান , Science »
- পৃথিবী কেনো সুর্যের চার পাশে ঘুরছে? সূর্যের মাহাকর্ষ টানে সূর্যের ভেতরে গিয়ে পড়ছে না কেনো?
পৃথিবী কেনো সুর্যের চার পাশে ঘুরছে? সূর্যের টানে সুর্যের ভেতরে গিয়ে পড়ে না কেনো?
সম্ভবত এই প্রশ্ন আমার মতো আপনার মাথাও ঝুলিয়ে (হ্যাং) দিতো। :p
উত্তর যদি হয় হ্যা। তবে আপনার সমাধান এখানে। :) ১০০% কার্যকর সমাধান। বিফলে মূল্য ফেরত! (আপনি তো কোনো মূল্যই দেন নাই, ফেরত দিমু কি :p )
আসেন শুরু করি,
এই সমস্যার সমাধানে আমারা সমস্যা টাকে দুই ভাগে ভাগ করে নিতে পারি।
১. পৃথিবী কিভাবে নিজের কক্ষ পথে গেলো? (না ইতিহাস কমু না)
২. সেখান থেকে সুর্যের মাহাকর্ষ টানে কেনো সে সুর্যের ওপর পড়ছে না? (আসল সমস্যা :( :x )
১ম সমস্যার সমাধান টা এখন বুঝলেও স্কুল জীবনে শুধু পড়েই এসেছি কিন্তু তখন বিষয় টা বুঝিনি। সম্ভবত বুঝিয়ে দেওয়ার মতো কেউ ছিলো না অথবা বাজে (বিজ্ঞানের) বই পড়ার অভ্যাস কখনো ছিলো না সেজন্য।
তো ব্যাপার টার ব্যাখ্যা নিউটন সাহেব ক্যানন বল (কামান বল) পরীক্ষা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
(আবার নিউটন!! :( x( )
ব্যাখ্যা টা হলো, কোনো পাহাড়ের চূড়া থেকে যদি কোনো কামান ছোড়া হয় তবে সেটি পাহাড়ের পাদদেশে পাহাড় থেকে একটু দূরে এসে পড়বে। এখন কামান যত জোড়ে ছোড়া হবে, কামানের বল টি পাহাড়ের পাদদেশের মাটিতে তত দূরে পড়বে।
এখন কামানটাকে যদি প্রচন্ড জোড়ে মারা সম্ভব হয় তবে কি হবে? কামান টি সোজা যে বরাবর ছোড়া হবে সেই বরাবর পৃথিবী থেকে সোজা দূরে চলে যেতে চাইবে। কিন্তু পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষন বল কামানের গোলাটিকে নিজের দিকে টানবে, ফলে গোলাটি বৃত্তাকার পথে পৃথিবীকে পরিভ্রমন করতে থাকব।
একটা gif এনেমেশন দিলাম, ( দেখা যাবে)
তথ্য: বৃত্তাকার পথে ঘোরার জন্য কামানের গোলাটিকে যত জোড়ে নিক্ষেপ করা প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি জোড়ে নিক্ষেপ করলে সে উপবৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকবে। ফলে নিক্ষেপের বেগ যত বেশি হবে কক্ষ পথ তত বেশি উপবৃত্তাকার হবে।
--------------
এখন ২য় সমস্যা টা হলো এভাবে ঘুরতে ঘুরতে তো এক সময় কামানের গোলাটি অভিকর্ষের টানে মাটি পড়ার কথা। তাহলে পৃথিবী কেনো সুর্যের ওপর গিয়ে পড়ছে না?
আচ্ছা তাহলে ব্যাপার টি একটু তলিয়ে দেখা যাক।
পৃথিবী যদি সুর্যের ওপর গিয়ে পড়ে তবে সুর্যের দিকে পৃথিবীর সরণ হবে।
আমরা জানি, কোনো বস্তু কর্তৃক কোনো যদি কাজ হয় তবেই কোনো দিকে ঐ বস্তুর সরণ হবে।
সহজ কথায় বললে, সরণ হলে কাজ হয়; সরণ না হলে কাজ শুন্য।
তাহলে উলটো ভাবে বলতে পারি, কাজ শুন্য হলে সরণ শুন্য।
তার মানে বোঝা যাচ্ছে যে, কোনো এক বিশেষ কারণে সুর্যের মহাকর্ষ বল কর্তৃক পৃথিবীর ওপর কৃত কাজ শুন্য; যার ফলেই সুর্যের দিকে পৃথিবীর কোনো সরণ হচ্ছে না।
Get ready এবার আমরা আবিষ্কার(?) করবো কেনো সুর্যের মহাকর্ষ কর্তৃক পৃথিবীর ওপর কৃতকাজ শুন্য।
আমরা জানি যে পৃথিবী সুর্যকে বৃত্তাকার পথে পরিভ্রমন করছে। (প্রকৃত পক্ষে উপবৃত্তাকার; আমরা হিসাবের সুবিধার জন্য বৃত্তাকার ধরলাম)
তাহলে সুর্যের মহাকর্ষ যেহেতু সোজাসুজি (লম্ব ভাবে) পৃথিবীকে আকার্ষন করছে এবং পৃথিবী এর কক্ষপথের স্পর্শক বরাবর ছুটে চলে যেতে চাইছে। সেহেতু, পৃথিবীর ছুটে চলার অভমুখ ও সুর্যের মহাকর্ষ বলের মধ্য কোণের সাইজ হলো ৯০ ডিগ্রি।
আর আমরা জানি,
W = Fx cos Θ
যেখানে,
W হলো কৃত কাজের পরিমান;
F যে বলের দ্বারা কাজ হচ্ছে সেই বলের পরিমান (এখানে সূর্যের আকর্ষন বল);
X হচ্ছে যে বস্তুর ওপর কাজ হচ্ছে তার সরণের পরিমান;
এবং Θ হচ্ছে বল ও সরণের মধ্য কোনের পরিমান।
আমরা ওপরে দেখলাম যে সূর্যের আকর্ষন বল ও পৃথিবীর সরন (কক্ষ পথে সরণ) এর মধ্য কোনের পরিমান 90 ডিগ্রি।
তাহলে,
W = Fx cos Θ
এই সুত্রে Θ এর মান ৯০ ডিগ্রি বসাই তবে cos90 এর মান হলো শূন্য (০).
cos 90 এর মান শুন্য হলে W এর মান অর্থাৎ কাজের পরিমানও শুন্য হয়।
কারণ,
W = Fx * 0 [cos90 = 0 বসে]
W = 0
তাহলে, এখানে যেহেতু কাজের পরিমান শুন্য হচ্ছে সুতরাং সুর্যের আকর্ষন বল পৃথিবী কে তার কক্ষপথ থেকে এক চুল ও সরাতে পারছে না।
তাহলে ব্যাপার টা দঁাড়ায় যে, পৃথিবী সৃষ্টির সময় যে আদি বেগ নিয়ে সুর্যের চার দিকে ঘোরা শুরু করেছিলো ঠিক সেই পরিমান আদিবেগ এখনো সংরক্ষিত আছে।
এখন একটা প্রশ্ন দেখা দেয়, ওপরের সুত্র দেখাচ্ছে যে "F" এর মান অর্থাৎ সুর্যের বল যদি আরো কয়েক থেকে কয়েক হাজার গুন করা হয় তাহলেও "W" অর্থাৎ কাজ শুন্যই থেকে যাবে। এটা কি করে সম্ভব।
আচ্ছা, এখানেও একটি ইন্টারেষ্টিং ঘটনা আছে সেটা হলো, সুর্যের আকর্ষন বল যদি আরো বেশি হতো তবে পৃথিবী যখন প্রথম তার কক্ষে সচল হয় তখন এই সচল হওয়ার জন্য আরো বেশি আদিবেগ লাগতো। সেই আদি বেগ বর্তমান পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকতো। ফলে ঘটনা যা আছে সেটাই ঘটতো।
আর সুর্যের আকর্ষন বল যদি বেশি হতো তবে যে আদি বেগে পৃথিবী সচল হয়েছিলো সেই আদি বেগে পৃথিবীকে লঞ্চ করলে পৃথিবী সুর্যের মধ্যে পড়ে যেত তখনই।
(তাহলে চিন্তা করে দেখেন কত হিসাবের ঘটনা)
আমি মুর্খ মানুষ তাই হয়তো আপনাদের সহজ ভাবে বোঝাতে পারিনি। জ্ঞানী কেউ পোষ্ট টা লিখলে আরো সহজে নিশ্চই বোঝাতে পারতো। তবে আমি জানি যে আপনারা ঠিকি বুঝেছেন কারণ আপনারা আমার চেয়ে বুদ্ধিমান তো বটেই।
[ছবি গুলো গুগোল থেকে নেওয়া। ছবির মালিক যিনি কপি রাইট তার। (কারন জানি না কোন ছবি কার :P) ]