শুক্রবার, ৯ মে, ২০১৪
৩রা মে ১৯৮৪
– এর পড়ন্ত এক বিকেলে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন্র বসে গল্প করছিলেন জননেত্রী
শেখ হাসিনা সহ কয়েকজন।
৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ
ও পাকিস্তানী সেনা বাহীনির কথা উঠলো। প্রসঙ্গ উঠলো ৭১ এর মুক্তি যুদ্ধের মধ্য দিয়ে
গড়ে ওঠা বাংলাদেশের সেনা বাহীনির কথা।
“এটা একটা সেনাবাহিনী হলো?
একটা বর্বর, নরপিচাশ,
উচ্ছৃঙ্খল, লোভী, বেয়াদব বাহিনী। এই বাহিনীর আনুগত্য নেই, শৃংখলতা নেই, মানবিকতা নেই,
মান্য গন্য নেই নেই দেশ প্রেম। একটা দেশদ্রোহী অসভ্য হায়েনা বাহিনী।
তোমরা পাকিস্তানি
সেনা বাহিনীর কথা বলো। সারা বিশ্বে পাকিস্তানী সেনা বাহিনীর মতো এতো ভদ্র, নম্র, সত্য,
বিনয়ী এবং আনুগত্য শীল খুজে পাওয়া যাবে না। কি অসম্ভব সভ্য আর নম্র তারা!!
২৫ এ মার্চ রাতে
তারা (পাকিস্তানী সেনা বাহিনী) এলে আব্বা (শেখ মুজিব কে) কে সেলুট করলো, মাকে সেলুট
করলো, আমাকেও সেলুট করলো।
সেলুট করে তারা
বলল, “স্যার আমরা এসেছি শুধু আপনাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। অন্য কোনো কিচুর জন্য
নয়। আপনারা যখন খুশি , যেখানে খিশি যেতে পারবেন। যে কেউ আপনাদের এখানে আসতে পারবেন। আমরা শুধু আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। আপনারা
বাইরে গেলে নিরাপত্তার জন্য আমরা আপনাদের সঙ্গে যাবো। কেউ এখানে এলে আমরা তাকে তল্লাসি
করে ঢুকতে দেবো। এসব করা হবে আপনাদের নিরাপত্তার জন্যই।”
২৬ শে মার্চ দুপুরে
যখন আব্বাকে পাকিস্তানি সেনা বাহিনী নিয়ে যায়, তখন জেনারেল টিক্কা খান এসে নিজে আব্বাকে
ওমাকে সেলুট দিয়ে আদবের সাথে দাঁড়িয়ে নিনয়ের সাথে আব্বা কে বলে,
“স্যার আপনামকে
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আলোচনায় নিয়ে যেতে বলেচেন। আমি আপনা কে নিয়ে যেত এসেছি আপনার
জন্য বিশেষ বিমান তৈরি। আপনি তোইরি হয়ে নেন আপনি ইচ্ছা করলে মেডাম (বেগম মুজিব) সহ
যে কাউকে সঙ্গে নিতে পাড়েন।”
আব্বা মার সঙ্গে
আলোচনা করে একাই গেলেন। পাকিস্তানি আর্মি যতদিন ডিউটি করতে এসেছে এসে প্রথমেই সেলুট
দিয়েছে।”
শুধু তাই নয়,
আমার দাদির সামন্য জ্বর হয়েছিলো। পাকিস্তানি রা হেলিকপ্টার করে দাদি কে টুঙ্গি পাড়া
থেকে দাদি কে ঢাকা এনে পিজি হাসপাতালে চিকিতস্যা করিয়েছে।
জয় (জননেত্রী
শেখ হাসিনা ছেলে) তখন পেটে , আমাকে প্রতি সপ্তাহে সি এম এইচ নিয়ে চেক আপ করাতো। জত
ইয় হওয়ার এক মাস আগেই আমা কে সি এম এইচে ভর্তি করিয়েছে। ১৯৭১ সালে জয় জম্ন হওয়ার পর
তারা খুশিতে মিষ্টি বাটোয়ারা করেছে। জয় হওয়ার সমস্ত খরচ পাকিস্তানিরাই বহন করেছে।
আমরা যেখানে খুশি
যেতাম। পাকিস্তানিরা দুই জিপ করে আমাদের সাথে যেতো। নিরাপত্তার জন্য পাহাড়া দিতে।
আর বাংলাদেশের
আর্মিরা, জানোয়ারের দল, অমানুষের দল। এই অমানুষ আমার বাবা মা ভাই সবাইকে মেরেছে। এদের
যেনো ধ্বংস হয়।
(লেখক শেখ হাচিনার
সাবেক ব্যাক্তিগত উপদেষ্টা- মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান রেন্টু)
গ্রন্থ- “আমার
ফাসি চাই”
